সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে সাতক্ষীরা বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়নের আওতাধীন নবনির্মিত সুলতানপুর বিওপি’র শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। বিজিবি’র অতিরিক্ত মহাপরিচালক, যশোর রিজিয়ন কমান্ডার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ হুমায়ূন কবীর প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) কলারোয়ার সুলতানপুর গ্রামে এই নতুন বিওপির উদ্ধোধন করেন।
উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে উপ-মহাপরিচালক, খুলনা সেক্টর কমান্ডার, কর্নেল মোঃ মেহেদী হাসান চৌধুরী, খুলনা-যশোর রিজিয়ন সদর দপ্তরের পরিচালক (অপারেশন), লেঃ কর্নেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সিকদার , সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক ও অধিনায়ক, লেঃ কর্নেল মোঃ আশরাফুল হক, খুলনা সেক্টর সদর দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (অপারেশন), মেজর মোঃ আমিনুর রহমান, সেক্টর সদর দপ্তর খুলনার অতিরিক্ত পরিচালক (এসএমও), মেজর সুশ্মিত শোভন দাস, এএমসি, সাতক্ষীরাস্থ বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক মোঃ মাসুদ রানা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আনুষ্ঠানিকভাবে নবনির্মিত সুলতানপুর বিওপিতে পতাকা উত্তোলন, বৃক্ষ রোপণ, বিওপির নামফলক উন্মোচন ও মোনাজাত শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। এ সময়ে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের মাঝে হুইল চেয়ার ও সাদা ছড়ি বিতরণ, দুস্থ জনসাধারণের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, দুস্থ অস্বচ্ছল রোগীদের জন্য ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প এর আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সাতক্ষীরাস্থ বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ ৫৪ কিলোমিটার এলাকা যা ইতোপূর্বে ১২টি বিওপি এবং ২টি বিশেষ ক্যাম্প এর মাধ্যমে আভিযানিক দায়িত্ব পালন করে আসছে। সাতক্ষীরা জেলার, কলারোয়া উপজেলার, ৭নং চন্দনপুর ইউনিয়নে বিজিবি এর হিজলদী ও চান্দুরিয়া নামে ২টি সীমান্ত ফাঁড়ি রয়েছে যার মাধ্যমে সাতক্ষীরা ব্যাটালিয়ন (৩৩ বিজিবি) সীমান্ত রক্ষার কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এই ২টি বিওপি এর মধ্যকার দূরত্ব ১০ কিঃমিঃ এরও বেশি। তাই এই ২টি সীমান্ত ফাঁড়ির মধ্যবর্তী এলাকায় দ্রুততার সাথে কার্যকরভাবে সীমান্ত সুরক্ষা, শান্তি শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য মধ্যবর্তী সুলতানপুর এলাকায় ‘‘সুলতানপুর সীমান্ত ফাঁড়ি’’ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। জমি অধিগ্রহণ শেষে ২০২১ সালের ২৬ আগষ্ট সুলতানপুর বিওপির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এটি সকল সুরক্ষা-সুবিধা সম্পন্ন একটি আধুনিক বিওপি। সীমান্ত সুরক্ষার দৃষ্টিকোন থেকে সুলতানপুর বিওপি’টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ফাঁড়ি। এই বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ এলাকা দক্ষিণে তালছাড়ি হতে উত্তরে বরমীতলা এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত।
অথিতিরা বলেন.,সাতক্ষীরা ব্যাটালিয়ন বড়াইবাড়ী যুদ্ধ জয়ী। ২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল জামালপুরের বড়াইবাড়ি সীমান্তে শত্রুকে প্রতিহত ও বিতাড়িত করে মাতৃভূমি রক্ষার প্রতিজ্ঞাকে বাস্তবায়নকারী এই ইউনিট সাতক্ষীরা সীমান্তেও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছে। মাতৃভূমির প্রতি ইঞ্চি ভূমির সূরক্ষা ও দেশের ভৌগলিক অক্ষন্ডতা বজায় রেখে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখার পবিত্র আমানত সুরক্ষা করতে বিজিবি বদ্ধপরিকর। সুলতানপুর বিওপি স্থাপনের ফলে সীমান্ত নিরাপত্তা সুসংহতকরণ এবং বিজিবি’র কার্যক্রমে গতিশীলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সীমান্ত এলাকার চোরাচালান দমন, নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধ, মাদক ও অস্ত্র-গোলাবারুদ পাচাররোধসহ আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
খুলনা গেজেট/ টিএ